🌄 "পরিবারকে সালাতের আদেশ কর" 🌄
🌄 "পরিবারকে সালাতের আদেশ কর" 🌄
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
[সুরা-ত্ব'হা, আয়াত-১৩২, তফসীর]
-----------------------------------------------------
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম,
----------------------------------------------
মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন-
---
"আর তুমি তোমার পরিবারকে সালাত (নামাজ) আদায়ের আদেশ দাও এবং নিজেও তার উপর অবিচল থাকো।
আমি তোমার কাছে রিজিক চাই না,
রিজিক তো আমিই তোমাকে দেই। আর শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্য।"
___________[সুরা-ত্ব'হা, আয়াত-১৩২]______
~~~
১৩২ নং আয়াতের সংক্ষেপকৃত তাফসীর:
---
মহান আল্লাহ বলেনঃ
তোমার পরিবারবর্গকে নামাযের আদেশ দাও যাতে তারা আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচতে পারে।
নিজেও ওর উপর অবিচলিত থাকো। নিজেকে এবং নিজের পরিবারবর্গকে জাহান্নাম হতে রক্ষা কর।
---
আল্লাহ পাক বলেনঃ
আমি তোমার কাছে কোন জীবনোপকরণ চাই না।
তুমি নামাযের পাবন্দী কর, (তাহলে) আল্লাহ তা'আলা তোমাকে এমন জায়গা হতে রিজিক দিবেন যে, তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।
আল্লাহ তাআলা খোদাভীরুদেরকে মুক্তিদান করে থাকেন এবং তাদেরকে কল্পনাতীত জায়গা হতে জীবিকা প্রদান করেন।
---
সমস্ত দানব ও মানবকে শুধুমাত্র ইবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করা হয়েছে। রিজিকদাতা ও ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ তা'আলা।
এজন্যেই মহান আল্লাহ বলেনঃ
"আমি তোমার কাছে রিযিক চাই না, বরং আমিই তোমাকে রিযিক দান করে থাকি।"
---
বর্ণিত আছে যে,
হযরত হিশামের (রঃ) পিতা যখন আমীর-উমারার নিকট গমন করতেন এবং তাদের শান-শওকত দেখতেন,
তখন তিনি নিজের বাড়ীতে ফিরে এসে এই আয়াতটিই তিলাওয়াত করতেন এবং বলতেনঃ
“হে আমার পরিবারবর্গ !
তোমরা নামাযের হিফাযত করো, নামাযের পাবন্দী করো,
তা হলে আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর দয়া করবেন।"
(এটা মুসনাদে ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত আছে)
----
হযরত সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন সংকীর্ণতার সম্মুখীন হতেন তখন তিঁনি বলতেনঃ
“হে আমার পরিবারবর্গ ! তোমরা নামায আদায় কর, এবং নামাযকে প্রতিষ্ঠিত রাখো।”
~~~
হযরত সাবিত (রাঃ) আরো বলেনঃ
সমস্ত নবীরই এই নীতিই ছিল যে, কোন কারণে তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়লেই নামায শুরু করে দিতেন।
(এটাও মুসনাদে ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে)
~~~
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ
“আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
“হে ইবনু আদম! তুমি নিজেকে আমার ইবাদতের জন্যে মুক্ত করে দাও,
আমি তোমার বক্ষকে ঐশ্বর্য ও অভাবহীনতা দ্বারা পূর্ণ করে দিবো। তোমার দারিদ্র ও অভাব দূর করে দিবো।
আর যদি তা না কর তবে আমি তোমার অন্তরকে ব্যস্ততা দ্বারা পূর্ণ করবো এবং তোমার দারিদ্র দূর করবো না।”
(এ হাদীসটি জামে তিরমিযী ও সুনানে ইবনু মাজাহতে বর্ণিত আছে)
~~~
হযরত ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ
“যার সমস্ত চিন্তা ফিকির এবং ইচ্ছা ও খেয়াল একমাত্র আখেরাতের জন্যে হয় এবং তাতেই নিমগ্ন থাকে,
আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়ার সমস্ত চিন্তা ও উদ্বেগ থেকে রক্ষা করেন।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি শুধু দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন থাকে,
সে যে কোন উপত্যকায় ধ্বংস হয়ে যাক এতে আল্লাহ তাআলার কোন পরওয়া নেই।"
(এ হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
---
অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে,
দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন ব্যক্তির সমস্ত কাজে আল্লাহ তাআলা উদ্বেগ নিক্ষেপ করেন
এবং তার দারিদ্র তার চোখের সামনে করে দেন। মানুষ দুনিয়া হতে ঐ পরিমাণই প্রাপ্ত হবে যে পরিমাণ তার ভাগ্যে লিপিবদ্ধ আছে।
আর যে ব্যক্তি আখেরাতকে তার কেন্দ্র স্থল বানিয়ে নেবে এবং নিজের নিয়াত শুধু ওটাই রাখবে,
আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি কাজে প্রশান্তি আনয়ন করবেন এবং তার অন্তরকে পরিতৃপ্ত করবেন।
আর দুনিয়া তার পায়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে।"
---
এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
"শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্যেই।"
সহীহ হাদীসে আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ
“আজ রাত্রে আমি স্বপ্নে দেখি যে, আমরা যেন উকবা ইবনু রাফে’র (রাঃ) বাড়ীতে রয়েছি।
সেখানে আমাদের সামনে ইবনু তাবের (রাঃ) বাগানের রসাল খেজুর পেশ করা। হয়েছে।
আমি এর তা'বীর (ব্যাখ্যা) এই নিয়েছি যে, পরিণামের দিক দিয়ে আমাদেরই পাল্লা ভারী হবে। উচ্চতা ও উন্নতি আমরাই লাভ করবো।
আর আমাদের দ্বীন পাক, পবিত্র এবং পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ।”
(সুবাহানাল্লাহ)
----------------[তফসীর ইমাম ইবনে কাসির রহিঃ]
No comments
Post a Comment